গাজীপুরের টঙ্গীতে চাঁদাবাজির অভিযোগে অ্যাডভোকেট জিয়াউল হাসান স্বপনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য। রোববার (৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁ থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বপন পেশায় আইনজীবী হলেও ‘সাবেক বিএনপি নেতা’ পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হুমকি-ধামকি দিয়ে অর্থ আদায় করছিলেন। বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন তিনি। রাজধানীর বাড্ডা থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলায়ও তার নাম রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বপন একসময় টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন। বর্তমানে কোনো দলীয় পদে না থাকলেও ‘বিএনপি নেতা’ পরিচয়ে এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে আসছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে তিনি নানা সুবিধা আদায় করতেন। বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় থেকে তার চাঁদাবাজি ও মামলার হুমকির অভিযোগ আরও বেড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় শিক্ষক, বাড়িওয়ালা ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে স্বপন মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দিতেন।
চাহিদা মতো টাকা, দামি মোবাইল বা ব্যবসার অংশীদারিত্ব না পেলে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতেন। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে টঙ্গী পূর্ব থানায় দুটি মামলা এবং একাধিক লিখিত অভিযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত একাধিক অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, “রোববার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় চারটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।” প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার (৭ জুলাই) তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :